নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটি থেকে বহিষ্কৃত হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি অস্ট্রিয়া প্রবাসী আলোচিত বাংলাদেশি নাগরিক সেফুদার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ও লেনদেন রাখতেন বলে জানিয়েছে র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)
শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
মঈন বলেন, সেফুদা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের মাধ্যমে দেশবাসীর নজর কাড়তে চেষ্টা করেন। তার সঙ্গে গ্রেফতারকৃত হেলেনার নিয়মিত যোগাযোগ ও লেনদেন রয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।
এদিকে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, র্যাব সদস্যরা হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। লিখিত অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাত ৮টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর রোডের বাসভবনে অভিযান শুরু করে র্যাব। দীর্ঘ চার ঘণ্টা অভিযান শেষে রাত ১২টার দিকে তাকে আটক করা হয় এবং পরে র্যাব সদরদফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) দুপুরে এক এসএমএস বার্তায় তাকে গ্রেফতারের তথ্য জানায় র্যাব। ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। তার বাসায় বিপুল পরিমাণের মাদকসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র জব্দ করা হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাতে গুলশানের ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাসায় দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করে র্যাব। এ সময় তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়। আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সংগঠনের নীতিবহির্ভূত হওয়ায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্যপদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
নামের সঙ্গে লীগ যুক্ত করে গড়ে ওঠা আওয়ামী লীগের অনুমোদনহীন একটি সংগঠনের সভাপতি পদে নাম আসার পর তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নিয়েছে দলটির মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটি।
এই উপ-কমিটিতেই সদস্য ছিলেন- দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর পরিচালক পদে থাকা হেলেনা জাহাঙ্গীর। জয়যাত্রা গ্রুপের কর্ণধার হেলেনা জাহাঙ্গীর নিজেকে আইপিটিভি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবেও পরিচয় দেন।
সম্প্রতি ফেসবুকে বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামের একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নাম আসে। সব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা তিনি অস্বীকার করেছেন।
সান নিউজ/এফএআর