ফিচার ডেস্ক : পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও সমানভাবে অবদান রেখেছেন মানবসভ্যতার ইতিহাসে। নারীরা পুরুষ একে অন্যের প্রেরণার উৎস হয়ে কাজ করছেন যুগ যুগ ধরে। নারীদের বলা হয়ে থাকে কোমলতা, ভালবাসা ও শান্তির প্রতীক।
প্রকৃতিই তাদের এই বৈশিষ্ট্যগুলো দিয়েছে। কিন্তু এই পৃথিবীতে এমন কয়েকজন নারী রয়েছেন যাদের নৃশংসতা ও হিংস্রতা হার মানিয়েছে সবকিছুকে। তাদের গল্প কেড়ে নেয় রাতের ঘুম। এমনই কয়েকজন নারীর কথা তুলে ধরা হল-
১. ওয়ানেতা হোইয়াট
নিউইয়র্কের এই মা বেঁচেছিলেন ১৯৪৬ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত। ১৯৬৫ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে তিনি নিজের ৫ সন্তানকে হত্যা করেন। প্রথমদিকে এই শিশুদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘সাডেন ডেথ সিনড্রোম’ মনে করা হয়।
কিন্তু ১৯৯২ সালে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি এই নারীর অশুভ মনের খবর পান। পরে ১৯৯৪ সালে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তিনি অপরাধ স্বীকার করেন।
২. মারিয়া সোয়ানেনবার্গ
এই ডাচ সিরিয়াল কিলারের জীবনকাল ছিল ১৮৩৯ থেকে ১৯১৫ পর্যন্ত। নিজের পরিবারের সদস্যসহ কয়েক ডজন মানুষকে খুন করেছেন তিনি। ধারণা করা হয়, তার হাতে খুন হয় ৬০ জনের বেশি মানুষ।
১৮৮০ এর দশকে বিষাক্ত আর্সেনিকের প্রয়োগে একের পর এক মানুষ মারতে থাকেন তিনি। অসুস্থ হয়ে পড়েন ১০২ জন। মারা যান ২৭ জন। নিজের মাকেও মেরে ফেলেছিলেন আর্সেনিকের প্রয়োগে।
৩. হেলেন জেগাদো
এই ফ্রেঞ্চ নারী বেঁচেছিলেন ১৮০৩ থেকে ১৮৫২ সালের মধ্যে। তিনিও আর্সেনিকের মাধ্যমে ৩৬ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেন। বিশেষজ্ঞরা তাকে মানসিক বিকারগ্রস্ত বলে মনে করতেন। পরে তাকে ১৮৫২ সালে গিলোটিনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
৪. গেসে গটফ্রাইড
এই জার্মান সিরিয়াল কিলারকে জনসমক্ষে ১৮৩১ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এই নারী বিষ প্রয়োগে তার সন্তানদের, বাবা-মাকে, তার দুই স্বামী এবং এক বন্ধুকে হত্যা করেন। তিনি সেবিকা হিসেবে খুবই ভালো ছিলেন। তার এই হত্যাকাণ্ডের খবর প্রকাশের আগে সবাই তাকে ‘ব্রিমেনের দেবদূত’ বলে ডাকতেন। যাদের সেবা করতেন তাদের খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে মারতেন গেসচে।
৫. অ্যামেলিয়া ডাইয়ের
ব্রিটেনের এই নারীকে একটি খুনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। কিন্তু তিনি শত শত শিশুকে মেরে ফেলেছিলেন। বিভিন্ন তদন্তে ধারণা করা হয়, তার হাতে ৪০০ শিশু প্রাণ হারায়। ইতিহাসের ভয়ংকরতম সিরিয়াল কিলারদের মধ্যে তিনি একজন। ১৮৯৬ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
৬. দারিয়া সালতাইকোভা
রাশিয়ার সম্ভ্রান্ত পরিবারের এক বিকৃত মস্তিষ্কের নারী। এই নারী বেঁচে ছিলেন ১৭৩০ থেকে ১৮০১ সাল পর্যন্ত। তিনি শতাধিক দাস-দাসীকে হত্যা করেন। তাকে প্রায় সময় হাঙ্গেরির ‘ব্লাড কাউন্টেস’ এর সঙ্গে তুলনা করা হয়।
৭. এলিজাবেথ বাথোরি
এই নারী ইতিহাসে ‘ব্লাড কাউন্টেস’ নামে কুখ্যাতি পায়। অভিজাত বংশের এই নারী ১৩৮টিরও বেশি খুনের পেছনে রয়েছেন। টানা ৬ বছর ধরে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলে। বেরিয়ে আসে তার রোমহর্ষক জীবনের কথা। তিনি ৩৮ জন দাসীকে নিষ্ঠুর নির্যাতনের পর হত্যা করেছিলেন। ধরা পড়ার পর বাকি জীবন জেলে কাটে তার।১৫৬০ থেকে ১৬১৪ সালের জীবনকাল তার।
তিনি এতটাই কুখ্যাত ছিলেন যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বাথোরি ইতিহাসের ভয়ংকরতম নারী হত্যাকারী হিসেবে শনাক্ত করে। বিভিন্ন তদন্তের পর বলা হয়, তার হাতে আসলে সাড়ে ৬ শোর বেশি মানুষের জীবন শেষ হয়। অনেকেই বলতেন, তিনি আসলে কুমারী দাসীদের রক্তে গোসল করতেন। এভাবে তার নিষ্ঠুরতা ছড়িয়ে পড়ে। ড্রাকুলার সঙ্গে একমাত্র তাকেই তুলনা করা হয়।
সাননিউজ/এএসএম