নিজস্ব প্রতিবেদক : সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ভিজিট ভিসায় কর্মী পাঠাচ্ছে কিছু রিক্রুটিং এজেন্সিসহ অসাধু চক্র। এ নিয়ে অভিযোগ ওঠার পর বিমানবন্দরে গিয়ে আটকে গেছে ভিজিট ভিসায় ইউএইগামী যাত্রীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আবুধাবিগামী ফ্লাইটে ভিজিট ভিসা ও পর্যটন ভিসার যাত্রীদের পরিবহন না করার ঘোষণা দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
এদিকে বাংলাদেশিদের ভিজিট ভিসা নিয়ে উদ্বিগ্ন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশ দূতাবাসও। সম্প্রতি দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বর্তমানে ভিজিট ভিসায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে এসে কাজ করার সুযোগ নেই। তাই চাকরি বা কাজের উদ্দেশ্যে ভিজিট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ থেকে ইউএইতে না যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছে দূতাবাস।
এ বিষয়ে কোনও রিক্রুটিং এজেন্সি বা দালালের প্ররোচনায় প্রলুব্ধ না হওয়ার জন্য সবাইকে সতর্কও করা হয়েছে। ইউএইতে বৈধভাবে নতুন কর্মী যেমন যেতে পারছেন না, তেমনি কাজ হারিয়ে প্রতিনিয়ত ফিরে আসতে হচ্ছে অনেককেই। গত এপ্রিলের পর বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত আসা কর্মীদের পরিসংখ্যান বলছে, করোনায় সৃষ্ট সংকটে ফিরে আসা প্রবাসী কর্মীদের অর্ধেকের বেশি এসেছেন মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য বলছে, গত ১ এপ্রিল থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সৌদি আরব, ইউএই, কুয়েত, কাতারসহ ২৮টি বৈদেশিক শ্রমবাজার থেকে ৩ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৮ জন প্রবাসী ফিরে এসেছেন। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৪৮৪ জন পুরুষ ও ৩৯ হাজার ২৭৪ জন নারী। তাদের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন ৮ হাজার ৩৯৭ জন নারী কর্মীসহ মোট ৮৭ হাজার ৫২৫ জন প্রবাসী কর্মী। এর মধ্যে আউটপাস নিয়ে ফিরেছেন ৭ হাজার ৮৪৬ জন।
সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফিরে আসা কর্মীরা বিমান বন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কে জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ইউএইর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ নেই। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো চাকরিরত কর্মীদের নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার চাকরিতে ফেরত নেয়া হবে বলে দেশে পাঠানোর সময় এসব কর্মীকে জানানো হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বড় শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাত।
২০০৮ সালে দেশটিতে গিয়েছিলেন সর্বোচ্চ ৪ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ জন কর্মী। ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর টানা দুই লাখের বেশি করে কর্মী দেশটিতে যান। তবে হঠাৎ করেই নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে ২০১২ সালের শেষ থেকে কর্মী নেয়া এক রকম বন্ধই করে দেয় ইউএই। বর্তমানে কিছু গৃহকর্মী ছাড়া অন্য কোনো পেশায় ভিসা দিচ্ছে না দেশটি। ২০১৯ সালে ইউএই যান ৩ হাজার ৩১৮ কর্মী। এর আগে ২০১৮ সালে ৩ হাজার ২৩৫, ২০১৭ সালে ৪ হাজার ১৩৫ এবং চলতি বছর যান ৮৫৩ কর্মী।
সান নিউজ/এসএ