নিজস্ব প্রতিনিধি, সালথা (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের সালথায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঠিপেটার অভিযোগ এনে সালথা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারণের আল্টিমেটাম দিয়েছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
ওসির অপসারণের দাবিতে শনিবার (৯ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স-এর সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এই আল্টিমেটাম দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সাবেক উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহদাৎ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিকুর রহমানসহ অনেকে।
সমাবেশে তারা জানান, ৮ জানুয়ারী উপজেলার মাঝারদিয়া এলাকায় দু’পক্ষের গ্রাম্য দলাদলির কারণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই সংঘর্ষের এক পর্যায়ে মাঝারদিয়া ইউনিয়নের খলিশপুট্টি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোশাররফ হোসেনসহ বয়োজৈষ্ঠ ৫/৭জন লোক মিমাংসার জন্য ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে কিছু লোক তাদের জানায়, অবস্থা খুব খারাপ ঐদিকে যাওয়া যাবে না। তারা তখন ঐখান থেকে ফেরার পথে পুলিশের লাঠিচার্জ দেখে সতর্কতার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেয় এবং তার গায়ে পরিহিত কোর্টে মুক্তিযোদ্ধার নেমপ্লেট ছিলো। তাদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিলো না, তারা সংঘর্ষের কাছেও যায়নি। তারা বলেছে আমরা মিমাংসার জন্য এসেছিলাম, আমাদের গায়ে হাত দিয়েন না।
তারপরই পুলিশের এক কনস্টেবল গিয়ে তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং ওসি নিজে গিয়ে লাঠিচার্জ করে ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে “মুক্তিযোদ্ধা মারে ঠেঙ্গাই”। লাঠিচার্জের কারণে আহত অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, এই ঘটনায় আমরা বিচার চাই না, আমরা ওসির অপসারণ চাই। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই ওসিকে অপসারনের দাবি করছি। অপসারণ না করলে আমরা আবার রাজপথে নামবো।
প্রতিবাদ সমাবেশে এই ঘটনাকে “ন্যাক্কারজনক ঘটনা উল্লেখ করে” সাবেক উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা আজ মর্মাহত, এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। যে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছে, তারা আজ লাঞ্ছিত। এই ওসির কর্মকান্ড আমাদের মর্মাহত করে তুলেছে। আমরা ওসি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারনের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে সালথা থানার ওসি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এ প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান, এ বিষয়ে আমি কি বক্তব্য দিবো, তারা মানববন্ধন ও সমাবেশ করছে করুক। আমি এ ঘটনায় জড়িত নই বলে ফোন কেটে দেন।
সান নিউজ/বিডি/এনকে