আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের বন্ধু সাইমন ড্রিং মারা গেছেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একুশে টেলিভিশনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইমন ড্রিং মারা গেছেন। গত শুক্রবার (১৬ জুলাই) অন্ত্রের সমস্যায় রুটিন সার্জারির সময় রোমানিয়ার একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান! তার বয়স হয়েছিলো ৭৬ বছর! লন্ডন প্রবাসী সাংবাদিক সৈয়দ নাহাস পাশার এক ফেসবুক পোস্ট থেকে এ খবর জানা যায়।

মৃত্যুকালে তিনি তার সঙ্গী ফিয়োনা ম্যাকফেরসন, দুই সন্তান আভা রোজ ও ইন্ডিয়া রোজকে রেখে গেছেন।

সাইমন ড্রিং ষাটের দশক থেকে দীর্ঘসময় বিবিসিতে ওয়ার করেসপন্ডেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতময় দেশের যুদ্ধের ওপর রিপোর্ট করেছেন তিনি।

সাইমন মাত্র ১৮ বছর বয়সে ব্যাংককের ওয়ার্ল্ড নিউজপেপারে সম্পাদনা সহকারি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধে রয়টার্স এবং অন্যান্য সংবাদ সংস্থাগুলোর জন্য রিপোর্ট করেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইমন ড্রিং গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম বিদেশি সাংবাদিক। জীবন বিপন্ন রেখে সরেজমিন প্রতিবেদন তৈরি করে সারাবিশ্বকে জানিয়ে দেন পাকিস্তানি বাহিনীর লোমহর্ষক নির্যাতন ও গণহত্যার কথা।

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভরা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালোরাতে সাইমন ড্রিং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে (পরবর্তীতে - হোটেল শেরাটন, বর্তমানে -হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল) লুকিয়ে ছিলেন।

তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক আইনের তোয়াক্কা না করে ২৭ মার্চ তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ করে ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় প্রতিবেদন আকারে প্রেরণ করেন, যা ট্যাংকস ক্র্যাশ রিভোল্ট ইন পাকিস্তান শিরোনামে (৩০ মার্চ) প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জনমত সৃষ্টিতে তার এ প্রতিবেদনটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে সাড়া জাগিয়েছিলো। ওই প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ‘আল্লাহর নামে আর অখণ্ড পাকিস্তান রক্ষার অজুহাতে ঢাকা আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত ও সন্ত্রস্ত এক নগর। পাকিস্তানি সৈন্যদের ঠাণ্ডা মাথায় টানা ২৪ ঘণ্টা গোলাবর্ষণের পর এ নগরের...।’

১৯৭১ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাকে জোরপূর্বক দেশ থেকে বের করে দেয়। ইংল্যান্ডে ফিরে গিয়ে পুনরায় নভেম্বর, ১৯৭১ সালে কলকাতায় আসেন তিনি। সেখান থেকে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের যাবতীয় খবরা-খবর নিরপেক্ষভাবে প্রেরণ করতেন। ১৬ ডিসেম্বর তারিখে বিজয়ের দিনে যৌথবাহিনীর সঙ্গে তিনিও ঢাকায় এসেছিলেন।

কর্মজীবনে তিনি বাইশটি যুদ্ধ কাভার করেন। ১৯৭৯ সালে তিনি খোমেনিকে প্যারিস থেকে ইরানে ফেরত যাওয়ার বিমানে ছিলেন। সাইমন বেশ কয়েকবার আহত হন এবং তাকে উগান্ডায় বন্দী করে রাখা হয়েছিলো। তাকে মৃত্যুদণ্ডের হুমকি দেওয়া হয়েছিলো।

সাইমন ব্রিটেন এবং আন্তর্জাতিকভাবে অনেক পুরষ্কার লাভ করেন। তিনি জন সিম্পসনসহ বিবিসির আরও অনেক সংবাদদাতাদের সঙ্গে কাজ করেন।

১৯৯৭ সালে ড্রিং বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। বাংলাদেশের টেলিভিশন সাংবাদিকতায় আধুনিক ও নতুন ধারা সৃষ্টি করেন।

ইংল্যান্ডের নরফোকের ফাকেনহাম শহরে ১১ জানুয়ারি, ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন সাইমন ড্রিং। শৈশবে আওজ নদীতে উলঙ্গ অবস্থায় সাঁতার কাটার অভিযোগে তাকে বোর্ডিং স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিলো। এরপর তিনি কিংস লিন টেকনিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৬ বৎসর বয়সে তিনি গৃহত্যাগ করেন। ১৯৬২ সালে বহিঃবিশ্ব ভ্রমণের অংশ হিসেবে ভারত ভ্রমণে আসেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘুরে অবশেষে যোগ দেন সাংবাদিকতায়।

সান নিউজ/সিই/এনএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভোলায় অনুষ্ঠিত হলো প্রাণী প্রদর্শনী মেলা

ভোলা প্রতিনিধি: ‘প্রাণিসম্পদে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট ব...

সম্মিলনী বিদ্যালয়ের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুর জেলার সদর ইউনিয়...

বাংলাদেশ স্কাউট দিবস ২০২৪ পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে অনুষ্...

ভাসানচরে এক রোহিঙ্গাকে গলা কেটে হত্যা

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যা...

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক : দেশে তাপপ্রবাহ বাড়ছে। আর এই গরমে সবচেয়ে ব...

মন্ত্রীর আত্মীয় বলে ছাড় পাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডাক টেলিযোগাযো...

গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহত

জেলা প্রতিনিধি: ফরিদপুরে গণপিটুনিতে আশরাফুল খান (১৭) ও আশাদু...

মানুষ এখন মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থনৈতিকভাবে...

ফরিদপুরে সংঘর্ষ, নিহত ২

জেলা প্রতিনিধি : ফরিদপুরে মাইক্রোবাস ও মাহেন্দ্র মুখোমুখি সং...

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক

জেলা প্রতিনিধি: ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা