আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল নেতা মমতার ‘খেলা হবে’ শব্দ দিয়ে একে ভোটের থিমলাইন করে তুলেছেন, অন্যদিকে সরাসরি নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে তার মোকাবিলা শুরু করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, দিদি বলছেন,‘খেলা হব’ আর আমি বলছি ‘খেলা শেষ হবে’। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।
গত বৃহস্পতিবার ( ১৮ মার্চ )পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার জনসভায় মোদি বলেছেন, ‘দিদি বলছেন, খেলা হবে। আমি বলছি, শিক্ষা হবে। স্বাস্থ্য হবে। হাসপাতাল হবে”। মোদি আরও বলেছেন, ‘দিদির খেলা শেষ! এবার পালা উন্নয়নের।’
এটা বড় কথা নয় যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা তারপরও তিনটি নির্বাচনী প্রচারণায় ‘খেলা হবে’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। তাতে তার জনতা সাড়াও দিয়েছে। বস্তুত, সাগর থেকে পাহাড় তৃণমূলের সব প্রার্থী এবং নেতার মুখে ‘খেলা হবে’ শোনা যাচ্ছে। এতদিন বিজেপির কোনও নেতা, রাজ্য বা কেন্দ্রে, তার যুতসই মোকাবিলা করতে পারেননি।
কিন্তু মোদি তার পাল্টা স্লোগান চালু করে দিয়ে গিয়েছেন। শনিবার ( ২০ মার্চ ) মোদির খড়্গপুরে সভা করার কথা। সম্ভবত সেখানেও তিনি তার পাল্টা রাজনৈতিক আক্রমণ করে বক্তব্য রাখবেন। তৃণমূল স্বাভাবিকভাবে মনে করছে, দিদির পাল্টা মোদির স্লোগান ভারে কাটলেও ধারে কাটবে না। অন্যদিকে, বিজেপি মনে করছে, এতদিনে একটা আক্রমণের রাস্তা পাওয়া গিয়েছে।
এতদিন নিচুতলার কর্মীরা ‘খেলা হবে’ বলে প্রতি আক্রমণ করছিলেন। কিন্তু মোদি অনেক উচ্চৈঃস্তরের রাজনৈতিক প্রতি আক্রমণ করলেন। যেমন বিজেপির বোলপুরের প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘এটাই তো আমাদের লক্ষ্য। গণতন্ত্র, শাসন, ভোট প্রক্রিয়া এবং মানুষের আশা পূর্ণ করাটা আমাদের কাছে খেলা নয়। এগুলো আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
যারা খেলা হবে বলছেন, তারা বিষয়টাকে খাটো করছেন। মানুষের আবেগ, আশা নিয়ে খেলছেন। তাদের কোনও ইতিবাচক বক্তব্য বা লক্ষ্য নেই। আমাদের যে ইতিবাচক লক্ষ্য আছে, তা স্পষ্ট করলেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির সঙ্কল্প বুঝিয়ে দিলেন। যা ক্ষমতায় এলে আমরা করব। এটা অনেক দিন আগেই দরকার ছিল।’
তৃণমূলের প্রবীণ সংসদ সদস্য সৌগত রায় অবশ্য মনে করছেন, মোদির পাল্টা আক্রমণে তাদের কিছু যাবে-আসবে না। তার কথায়, ‘মোদি আসলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। উনি বুঝে গিয়েছেন, অসম জিততে পারবেন না। তাই বাংলাকে পাখির চোখ করেছেন। কিন্তু মমতা যে স্লোগান দিয়েছেন, তার মোকাবিলায় মোদির স্লোগান ধোপে টিকবে না।
প্রথমত, উনি বলছেন হিন্দিতে। দ্বিতীয়ত, উনি তো মমতার স্লোগান ধার করেই তার স্লোগান আবিষ্কার করেছেন। এটা প্রতি আক্রমণ নয়। এটা অনুকরণ। যেমন উনি মমতার পরিবর্তন এর স্লোগান অনুকরণ করে আসল পরিবর্তন এর কথা বলছেন। এতে বাংলার মানুষ ভুলবেন না।’
আবার বিজেপির প্রার্থী তথা রাজ্যদলের প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের মতে, ‘উনি তৃণমূলের স্লোগান অনুকরণ করেননি। বরং তৃণমূলের অস্ত্রেই তৃণমূলকে ঘায়েল করে গিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদির রাজনীতিই হলো উন্নয়নের রাজনীতি। সেই ব্যাখ্যাই তিনি দিয়েছেন। দেশের উন্নয়নই যে তার রাজনীতি, সেটাই যে তার লক্ষ্য, তা বোঝাতেই তিনি কাজ করছেন। তার লক্ষ্য জিডিপি বৃদ্ধি। বাংলায় এসে তার লক্ষ্য, তার ভাবাবেগ থেকেই তৃণমূলের রঙ তৃণমূলকে মাখিয়ে দিয়ে গেলেন।’
সান নিউজ/এসএ