নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া :ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে গত এক সপ্তাহে বন্দী সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১৬৪১, ১৬৩৬ ও ১৬১৩ জন। অথচ কারাগারের বন্দী ধারণ ক্ষমতা ৬০৩ জন। এ অবস্থায় বন্দিরা অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পোহাতে হচ্ছে নানা ভোগান্তি। ২০০৯ সালে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পাশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার উড়শিউড়ায় নতুন এ কারাগারটি যাত্রা শুরু করে, যা জেলা সদর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনুসারে একজন বন্দির থাকার জন্য ৩৬ স্কয়ার ফুট জায়গা বরাদ্দ। প্রতি ২০ জনের জন্য একটি করে টয়লেট বরাদ্দ। কিন্তু ধারণক্ষমতার প্রায় তিনগুণ বন্দি থাকায় বন্দিরা বরাদ্দ অনুযায়ী ন্যায্য সুবিধা পাচ্ছে না। এই কারাগারে পুরুষের চারটি ও নারীদের একটি ভবন রয়েছে। আর এসব বন্দিদের জন্য জেল সুপার, জেলার ও ডেপুটি জেলারসহ মোট ১১৫জন কারারক্ষী আছেন। ফলে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষকে।
মুক্তি পাওয়া হাজতিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বন্দি থাকায় রাতের বেলায় বেশি কষ্ট হয়। ঘুমানোর সময় গিজগিজ করে থাকতে হয় বন্দিদের। সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দেয় সকালে প্রাত্যহিক কাজ সারতে গিয়ে। সে সময় লাইনে দাঁড়িয়ে টয়লেটে যেতে হয়। এ নিয়ে বন্দিদের মধ্যে প্রায় বিবাদ দেখা দেয়। তাছাড়া করোনা নিয়ন্ত্রণে কোন নিয়ম কানুনই মানা হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে কারা কর্মকর্তারা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে সব সময়ই ১৪-১৫শ’ বন্দি থাকে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজত ইসলামের বিক্ষোভ ও হরতাল কর্মসূচিতে গত ২৬ থেকে ২৮শে মার্চ পর্যন্ত তিনদিন ব্যাপক তাণ্ডব চলে। তান্ডবের এসব মামলায় গ্রেফতার বেড়ে যাওয়ায় এখন প্রতিনিয়ত ১৬০০ থেকে ১৭০০ বন্দি থাকছে জেলা কারাগারে। ঈদের আগে বা পরে দ্বিতল ভবনটির ৪ তলায় সম্প্রসারণের কাজ শেষ হবে। এটি তাদের বুঝিয়ে দেয়া হলে বন্দি স্থান সংকুলানের সমস্যা কিছুটা দূর হবে। এদিকে বাধ্য হয়ে শুধু সেনিটাইজার দিয়েই করোনা মোকাবিলা করতে হচ্ছে বলেও জানানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেল সুপার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, স্থান সংকুলানের সমস্যায় প্রায় দুই শতাধিক বন্দিদের চট্রগ্রামের বিভাগের কুমিল্লা, ফেনীসহ বিভিন্ন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। আমাদের আরও একটি ভবন নির্মাণ কাজ চলছে যার মধ্যে আরো ২০০ জন বন্দি ধারণ করা যাবে।
সান নিউজ/আরএস