বিনোদন ডেস্ক : আলোচনা, স্মৃতিচারণ, আবৃত্তি, সঙ্গীত ও সেতারের সুরের মধ্য দিয়ে নাট্য নির্দেশক ইশরাত নিশাতকে স্মরণ করেছে সংস্কৃতিকর্মীরা।
ইশরাত নিশাতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে বুধবার (২০ জানুয়ারি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থিয়েটার সংগঠন দেশনাটক। সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই আায়োজন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই তৌহিদ মিতুল নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। তথ্যচিত্রে ইশরাত নিশাতের জীবনের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ, মাসুম রেজা, আজাদ আবুল কালাম, জুলফিকার চঞ্চল ও সঙ্গীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদার। এর আগে পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রসঙ্গীত।
আলোচনা পর্বে প্রয়াত এই নাট্যজনের যাপিতজীবন ও তার থিয়েটার জীবন নিয়ে কথা বলেন, মামুনুর রশীদ, আতাউর রহমান, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ, অনন্ত হিরা, জলের গানের রাহুল আনন্দ প্রমুখ।
স্মৃতিচারণ করেন প্রয়াত এই নাট্যকর্মীর ছোট বোন নিসবাত আনোয়ার।
মিলনায়তনে নাট্যজনদের কথামালায় যেমন ইশরাত নিশাত বিমূর্ত হয়ে উঠছিলেন, ঠিক তেমনি নাট্যশালার লবি থেকে সেতারের সুর শোকে মূহ্যমান করে তুলেছিল নাট্যকর্মী ও সুহৃদদের।
বক্তারা বলেন, একটি আন্দোলন, একটি সাহস, একটি চেতনা, একটি প্রতিবাদের নাম ইশরাত নিশাত। তার মত নিবেদিত থিয়েটারকর্মী বর্তমান সমাজে খুবই বিরল। নাটককে নিজের পরিবারের একটি অংশ মনে করতেন তিনি। মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন নির্ভীক এক হাতিয়ার। সম্পূর্ণ আয়ুষ্কালকেই ব্যয় করেছেন নাটকের পেছনে। সৈরাচার আমলে ‘যাত্রা নাস্তি’ নামের একটি পথনাটক রচনার মধ্য দিয়েই নিজের নাট্যজীবন শুরু। এরপর মঞ্চনাটকে নির্দেশনা ও অভিনয়ে যুক্ত হয়ে পড়েন তিনি।
নাট্যকর্মীদের জন্য তিনি ছিলেন পরম আশ্রয়। দেশ নাটকের জন্য তার নিরলস শ্রম, দলের সদস্যদের উদ্ধুদ্ধ করা ও আগলে রাখা এসব এখন আনন্দ বেদনার স্মৃতি। তার সাংগঠনিক শক্তি ছিল অপরিসীম। দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে দক্ষতার পরিচয় দিলেও থিয়েটারের রাজনীতিতে তিনি কখনও জড়াননি। থিয়েটারের মঞ্চে তিনি যেমন গুরুগম্ভীর একজন মানুষ ছিলেন, ঠিক তেমনি পারিবারিক ও ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন কোমল হৃদয়ের একজন মানুষ। ভালো নির্দেশনার পাশাপাশি তিনি খুব ভালো রান্না করতেন। তার প্রয়াণে নাট্যাঙ্গনে যে শূণ্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়।
কথামালার ফাঁকে ফাঁকে আবৃত্তি পরিবেশন করেন বাচিকশিল্পী হাসান আরিফ। সঙ্গীত পরিবেশন করে জলের গান।
সান নিউজ/এইচএস/এম