নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে টাইগারদের লিড ২১৮ রান।
বাংলাদেশের ব্যাটিং শুরুতেই দুই উইকেট পড়ে যায়। ক্রিজে থাকা সাদমানকে সঙ্গে নিয়ে খেলতে থাকেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। এক প্রান্তে সাবলীল ব্যাটিংয়ে খেলছিলেন দারুণভাবে। স্ট্রাইক রোটেটের সঙ্গে মারার বল পাঠিয়ে দিয়েছেন বাউন্ডারিতে। সাদমান সঙ্গে নিয়ে গড়া তৃতীয় উইকেটের জুটিতে মুমিনুল দিচ্ছিলেন ভালো কিছুর আভাস। এর মাঝে গ্যাব্রিয়েলের বলে ক্যাচ তুলে ৪২ বলে ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন সাদমান। ভেঙে যায় ৩২ রানের জুটি।
হাল ছাড়েননি মুমিনুল। এবার মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেই মাঠ ছাড়েন টাইগার অধিনায়ক। মুমিনুল ৪৯ বলে ৩১ ও মুশফিক ২৩ বলে ১০ রান করে অপরাজতি আছেন। দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ তিন উইকেট হারিয়ে ৪৭ রান। এগিয়ে থাকলো ২১৮ রানে।
তাছাড়া, তৃতীয় দিনে ৫ উইকেটে ২৫৩ রান থেকে শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হয়েছে ২৫৯ রানে। ৬ রানে পড়ে যায় ক্যারিবীয়দের শেষ ৫ উইকেট। বল লেগেছিল ২৩টি।
শেষ মুহূর্তে মেহেদী হাসান মিরাজ দুর্দান্ত বোলিং করলেন। তার ঘূর্ণির সামনেই বলতে গেলে নাকাল হয়েছে ক্যারিবীয়রা। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করার পর বল হাতে নিলেন ৪ উইকেট। দারুণ অলরাউন্ড নৈপূণ্য প্রদর্শণ করেছেন মিরাজ।
ম্যাচের সাত সেশন খেলা হওয়ার পর অবশেষ একটি সেশন নিজেদের করে নেয়ার পথে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ম্যাচের তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল তাদেরই হাতে। কিন্তু বিরতির ঠিক আগ দিয়ে জোড়া আঘাত করে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
পরে তৃতীয় সেশনের শুরুতে মাত্র ৩ ওভার বল করেই ক্যারিবীয়দের অলআউট করে দিয়েছে টাইগাররা। সবমিলিয়ে মাত্র ৬ রানে শেষের ৫ উইকেট হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জার্মেইন ব্ল্যাকউড ও জশুয়া ডা সিলভার ইনিংস সর্বোচ্চ ৯৯ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি ভাঙার পর মুখ থুবড়ে পড়েছে ক্যারিবীয়দের ইনিংস।
ইনিংসের ৫১তম ওভারের প্রথম বল থেকে শুরু করে ৯৩তম ওভারের তৃতীয় বল পর্যন্ত একসঙ্গে উইকেটে ছিলেন ব্ল্যাকউড ও জশুয়া। এতে অবশ্য অবদান ছিল বাংলাদেশের ফিল্ডারদেরও। স্লিপে দাঁড়িয়ে ব্ল্যাকউডের সহজ ক্যাচ ছাড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত, ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করেন ইয়াসির আলি রাব্বি।
দৃঢ় ব্যাটিংয়ের সঙ্গে ভাগ্যের সহায়তা পেয়ে ক্যারিবীয়দের ফলোঅন পার করায় ব্ল্যাকউড-জশুয়া জুটি। ব্ল্যাকউড তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১৪তম টেস্ট ফিফটি। দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশের বোলারদের হতাশ করে ৩০ ওভারে উইকেট না হারিয়ে ৬০ রান তুলে নেন এ দুজন।
সেশনের ৩১তম ওভারে জুটি ভাঙেন তাইজুল। তার অফস্ট্যাম্পের বাইরের নিচু হওয়া ডেলিভারি কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন জশুয়া। ক্যারিবীয় এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ১৪১ বল খেলে করেন ৪২ রান। পরের ওভারেই আরেক সেট ব্যাটসম্যান ব্ল্যাকউডকে ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ। লেগসাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট এগিয়ে দিয়ে কট বিহাইন্ড হন ৬৮ রান করা ব্ল্যাকউড।
এ দুই উইকেট তুলে নিয়ে চা পানের বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। তৃতীয় সেশনে ফিরে মাত্র ১৮ বলের মধ্যেই বাকি ৩ উইকেট নিয়ে নেয় টাইগাররা। সেশনের তৃতীয় বলে কেমার রোচকে ফেরান মিরাজ। নিজের পরের ওভারের প্রথম বলে রাহকিম কর্নওয়ালকেও বোল্ড করেন তিনি।
এর পরের ওভারের প্রথম বলে জোমেল ওয়ারিকানকে বোল্ড করে ইনিংস মুড়িয়ে দেন তাইজুল। দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকে ৫ উইকেটে ২৫৩ থেকে তৃতীয় সেশনের শুরুতে ২৫৯ রানেই অলআউট হয়ে গেছে ক্যারিবীয়রা। ফলে বাংলাদেশের লিড দাঁড়িয়েছে ১৭১ রানের।
সান নিউজ/এসএস