নিজস্ব প্রতিনিধি, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : থামছে না তিস্তা নদী ভাঙন। অব্যাহত নদী ভাঙনে সর্বহারা হয়ে পড়েছে চরবাসী। গত কয়েক মাসের অব্যাহত নদী ভাঙনে সহস্রাধিক বসত বাড়িসহ হাজারও একর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙনের মুখে হাজারও বসতবাড়ি এবং আবাদি জমি। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার লাগামহীন নদী ভাঙন চরবাসীকে দিশাহারা করে তুলেছে। নদী ভাঙনের কারণে প্রতিনিয়ত ঘরবাড়ি সরানো চরবাসীর জন্য অসহনীয় কষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিস্তার পানি কমে যাওয়ার পর থেকে উপজেলার শ্রীপুর, হরিপুর, বেলকা, চন্ডিপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। যতই পানি কমছে ততই নদী ভাঙন বেড়েই চলছে। বিশেষ করে হরিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের তীব্র আকারে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানগণের তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে গত কয়েক মাসের অব্যাহত নদী ভাঙনে সহস্রাধিক বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে হাজার একর জমি মৌসুমি ফসলসহ তিস্তা নদীর পেটে চলে গেছে।
হরিপুর ইউনিয়নের মাদারিপাড়া গ্রামের ওয়াহেদ আলী জানান, আমার বয়স ৫৫ বছর। এই বয়সে এ পর্যন্ত ১০ বার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি। চলতি বছরে ৩ বার নদী ভাঙনের স্বীকার হই। পরিবার পরিজন নিয়ে আমি আর নদী ভাঙন মোকাবেলা করতে পারছি না।
হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জিমি জানান, নদী পাড়ের মানুষ আমি নিজে। আমি জানি নদী ভাঙনের কষ্ট এবং জ্বালা যন্ত্রণা। নদী ভাঙন রোধে সরকারের বড় পদক্ষেপ ছাড়া আমাদের পক্ষে কোন কিছু করা সম্ভব নয়।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, নদী ভাঙন রোধ, সংস্কার, সংরক্ষণ আসলে বৃহৎ প্রকল্পের প্রয়োজন। এটি আসলে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তবে ইতোমধ্যে ৪০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে পানি সম্পদ মন্ত্রাণালয়।
এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী লুতফুল হাসান জানান, নদী ভাঙন রোধে জিও টিউব ও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে বিভিন্ন নদী ভাঙন কবলিত এলাকায়। এছাড়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে নদী ভাঙনের বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানান, জনস্বার্থে মহান সংসদে নদী ভাঙন বিষয় নিয়ে আমি কয়েক দফায় বক্তব্য উপস্থাপন করেছি। ইতিমধ্যে হরিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন নদী ভাঙন কবলিত এলাকায় কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রায় ১ হাজার জিও টিউব ও ব্যাগ ফেলা হয়েছে।
সান নিউজ/আরআই/এনকে/এস