জাহিদ হাসান মাহমুদ মিম্পা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : দেশে চালের বাজারে ভরা মৌসুমেও অস্থিরতা বিরাজ করতে থাকলে ভারত থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। শুল্ক বিভাগের ছাড়পত্র নিয়ে দেশে চাল আমদানি শুরু হয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে।
এদিকে চাল আমদানি শুরু হওয়ার এক মাস পেরিয়ে গেলেও নেই কোনো সুফল। উল্টো দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল উৎপাদনকারী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের অন্যান্য খুচরা বাজারে বেড়েই চলেছে চালের দাম। বাজার স্বাভাবিক রাখতে গত ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ১ মাসে ভারত থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৪১৮ মেট্রিক টন।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত এসব চাল এসেছে। পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেডের ম্যানেজার (অপারেশন) কামাল হোসেন তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে চাল আমদানিতে চালের বাজারে কোন প্রভাব পড়ছে না। উল্টো প্রত্যেক সপ্তাহে ১-২ টাকা করে বাড়ছে চালের দাম। অনেকেই অভিযোগ করছেন ভারত থেকে আমদানি হওয়া চাল বাজারে আসছে না।
খুচরা ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান জানান, বাজারে ভারতীয় চাল পাওয়া গেলেও দাম কমছে না। গত ১ মাসে কেজি প্রতি ২-৪ টাকা করে বেড়েছে প্রায় সবধরনের চালের দাম। খুচরা বাজারে আঠাশ বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৭ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে, মিনিকেট ৬০-৬৫ ও মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪-৪৫ টাকা কেজি দরে। তিনি আরো জানান, ভারতীয় চালের দাম দেশি চালের তুলনায় মোটেও কম নয়। ভারতীয় আমদানি করা চাল নূরজাহান (মোটা) খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৬ টাকা কেজি দরে।
ভারতীয় আমদানিকৃত চাল বাজারে না আসার অভিযোগ অস্বীকার করেন চাল আমদানিকারক তাসনিম এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী বাবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ভারতেই চালের দাম বেশি। স্বর্ণা-৫ ভারত থেকে টন প্রতি নিতে হচ্ছে ৩৭৫ ডলার দামে। এছাড়াও কাটারি, নাজির, মিনিকেটের দাম পড়ছে টন প্রতি ৪৫০-৪৮০ ডলার। এমনকি স্থলবন্দরে ডিউটি চার্জ ২৫ শতাংশ ধরা হচ্ছে। ট্রাক ভাড়াসহ যাবতীয় খরচ ধরতে গিয়ে দেশী চালের দামের সমপরিমাণ হয়ে যাচ্ছে ভারতীয় আমদানি করা চালের দাম। ভারতীয় আমদানি করা চালে খুচরা ব্যবসায়ীরা তেমন আগ্রহী নয় বলেও জানান তিনি।
পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেডের ম্যানেজার (অপারেশন) কামাল হোসেন জানান, মেসার্স তাসনিম এন্টারপ্রাইজ, নজরুল অটো রাইস মিল, মেসার্স ঘোষ এন্টারপ্রাইজসহ কয়েকটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসব চাল আমদানি করেছে। চালগুলোর মধ্যে রয়েছে নন বাঁশমতি, কাটারি, নাজির, মিনিকেট, স্বর্ণা-৫, রত্নাসহ আউশ চাল। এক মাসে ৩৩ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করেও চালের দাম বাড়তে থাকাকে অযোক্তিক বলে মনে করছেন চাল ব্যবসায়ীরা।
সান নিউজ/কেটি