নিজস্ব প্রতিনিধি, মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চেংগাড়া ডাক্তার পাড়ায় মানুষ চলাচলের একমাত্র শত বছরের রাস্তা দখল করে বালি রাখায় আবদ্ধ হয়ে পড়েছে প্রায় পঞ্চাশটি পরিবার। প্রশাসনকে বার বার অভিযোগ করে সমস্যার সমাধান পাইনি ভুক্তভোগী পরিবার। মালিকানা জমির দাবি করে রাস্তা ওপর বালি রাখায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার ওপর থেকে দ্রত বালি অপসারণ করে আবদ্ধ পরিবারদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগীরা।
জানাগেছে, চেংগাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন তার বাড়ির সামনের শত বছরের মানুষ চলাচলের একটি রাস্তা দখল করে তামাকঘর নির্মাণ করছিলেন।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা আদালতে মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গাংনী থানায় আদেশ জারি করেন স্থানীয় আইনশৃংখলা বজায় রাখতে। গাংনী থানা পুলিশ তোফাজ্জেল হোসেনের তামাকঘর নির্মাণ কাজ স্থগিত করেন এবং বালি অপসারণ করে স্থানীয়দের যাতায়াত নিশ্চিত করতে বলেন। কিন্তু দিনের পর দিন অতিবাহিত হলেও বালি অপসারণ করেনি তোফাজ্জেল হোসেন। বালি রাখার পর থেকেই আবদ্ধ হয়ে পড়ে অর্ধশত পরিবার। শিশু কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে গাংনী উপজেলা প্রশাসনকে কয়েকবার অবহিত করেন স্থানীয়রা। তবুও কোনো সুরাহা না হওয়ায় রাস্তার দাবিতে রোববার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা।
গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে এনামুল হক, ছহিরুদ্দীন, রফিজউদ্দিনের ছেলে আব্দুল বারিসহ উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, এটি প্রায় শত বছর ধরে মানুষ চলাচল করে। প্রায় পঞ্চাশটি পরিবারের একমাত্র রাস্তা এটি। সরকারি টাকায় কয়েকবার মাটি ভরাটের কাজ করে স্থানীয় শোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদ। হঠাৎ রাস্তাটি বন্ধ করে আমাদের আবদ্ধ করে রেখেছে তোফাজ্জেল হোসেন। এ নিয়ে কয়েকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
তবে তোফাজ্জেল হোসেনের মেয়ে পারুলা খাতুন বলেন, জমিটি আমাদের নিজস্ব মালিকানা তাই বালি রাখা হয়েছে। আমাদের নামে কাগজপত্র রয়েছে। তোফাজ্জেল হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা হলে তিনি বলেন, আমি কয়েকদিন পর বালি অপসারণ করব। তবে জমি আমার নামে খতিয়ান ভুক্ত হয়েছে। সরকারি খতিয়ানভুক্ত রাস্তা না।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন ভুমি অফিস ডহর উল্লেখ করে রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে প্রত্যয়ন প্রদান করেন তহশিলদার। জনগণের রাস্তা হিসেবে সরকারি অর্থে মাটি ভরাটের কাজ করা হয়েছে এবং দীর্ঘদিন রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে মর্তে প্রত্যয়ন দেন ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ করতে বলেন। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাংনী উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা নুর-ই- আলম সিদ্দিকী বলেন, রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হলেও সেটি মালিকানা খতিয়ানভুক্ত তাই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, আমি বিভিন্ন মহল থেকে জানতে পেরে এসিল্যান্ড সাহেবকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
সান নিউজ/এ/কেটি