মতামত

কোন দুর্যোগ আসছে! 

আবু রুশদ্ : চীনের ইউনান প্রদেশের দক্ষিনাঞ্চল শিশুয়ানবান্না। মায়ানমার সীমান্তবর্তী। পাহাড় ও বনের সাম্রাজ্য। সেখানে বনে এশিয়ান হাতির দল ঘুরে বেড়ায়। পুরো চীন থেকে লাখ লাখ পর্যটক শিশুয়ানবান্নায় যান প্রতিবছর ভ্রমণে। অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর এলাকা।

২০০৯ সালে সেখানে যাবার সৌভাগ্য আমার হয়েছিলো। তবে সাফারি পার্কে পরপর দুইদিন চেষ্টা করেও কোনো হাতির দেখা মেলেনি। ওই শহরে হাজার হাজার ভিয়েতনামি ও মায়ানমারের নাগরিক ভিসা ছাড়াই সাত দিনের জন্য আসতে পারেন নিজ নিজ গাড়ি নিয়ে। সীমান্তে শুধু পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র দেখালেই চলে। ভিয়েতনাম ও মায়ানমারের মানুষ সেখানে আসেন আরাম ও কেনাকাটা করতে।

মাসখানেক হলো ওই এলাকার গভীর বনাঞ্চল থেকে পনেরোটি হাতির এক দল ৫০০ কিলোমিটার পাহাড়িজঙ্গল পাড়ি দিয়ে রাজধানী কুনমিং-এ এসে পৌঁছেছে। দলে শিশুহাতিও আছে। বেশ দুর্গমই বলা চলে ওই এলাকা। হাতির দল পুরো পথে লাখ লাখ টাকার ফসল, বাড়িঘর ও সেচপাম্প নষ্ট করেছে। এখন বিশাল শহরে ও এর আশপাশের রাস্তায় গাড়ি চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে!

দল বেধে এরা কোথায় যাচ্ছে চীনের হাতি বিশেষজ্ঞরা কিছুই বলতে পারছেন না। চীনে তিনশ’র মতো এশিয়ান হাতি অবশিষ্ট আছে, সরকার এদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে থাকে এবং এদের কোনো ক্ষতি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

এর আগে কখনোই হাতি ওই এলাকার বনাঞ্চল ছেড়ে অন্য কোথাও যায় নি। এখন এই হাতির পাল কেন শত শত কিলোমিটার অতিক্রম করছে হঠাৎ করে, তা নিয়ে সবাই উৎকণ্ঠিত। কেউ কেউ বলছেন, কোনো বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগে হাতিরা এভাবে দল বেধে নিরাপদ আবাস খুঁজে নেয়! আবার কেউ বলছেন প্রকৃতি ধ্বংস করতে করতে এমন হচ্ছে।

এদিকে হাজার হাজার আনারস, কলাগাছ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তারা তো বটেই সাধারণ মানুষও হাতিদের পথ চলা থামানোর চেষ্টা করছে ও তাদের বনাঞ্চলে ফিরিয়ে নিতে চাইছে।

কিন্তু হাতি খাবারের লোভেও কাছে আসছে না! শহরের সড়ক পার হচ্ছে আয়েশ করে পরিবার নিয়ে! এ নিয়ে আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়েছে। ইউনান প্রদেশ যেহেতু করোনা ভাইরাসের বাহক বাদুড়ের আবাসস্থল, তাই সবাই উৎকণ্ঠিত যে কোনো না কোনো বড় ধরনের প্রাকৃতিক কারণ রয়েছে হাতির এই অদ্ভুত আচরণের পেছনে।

এখন পৃথিবীতে যে কোভিড-১৯ মহামারী চলছে, এই ভাইরাসের সাথে ইউনানের বাদুড় থেকে প্রাপ্ত ভাইরাসের প্রায় ৯৬ ভাগ মিল আছে। অনেকের অভিযোগ উহান ল্যাবে যে করোনা ভাইরাসের গবেষণা চলছিলো তার সব ভাইরাস আনা হয় ইউনানের গভীর বনাঞ্চলে বসবাসরত বাদুড় থেকে! এখন এতো গভীর বনাঞ্চল থাকার পরও হাতি তাহলে ওই এলাকা ত্যাগ করছে কেন?

উল্লেখ্য, ইউনানে রয়েছে বিশাল স্টোন ফরেস্ট বা ‘পাথরের বন’। মিলিয়ন বছর আগে ভারত মহাসাগর এলাকায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে যখন হিমালয় পর্বতমালা তৈরি হয়, তখন মাটির নিচের লাভা উদগীরণ হয়ে ইউনানের পাহাড়ের পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অত্যাশ্চর্য পাথুরে বন তৈরি করে।

চীনারা ওই পাহাড়ি এলাকা ওই রকমই রেখেছে এবং সেখানে বছরে কয়েক কোটি মানুষ যায় স্টোন ফরেস্ট দেখতে। জানি না আবার কোন ফরেস্ট কিংবা কোন দুর্যোগ আসছে!

লেখক : আবু রুশদ্

সম্পাদক ও প্রকাশক
বাংলাদেশ ডিফেন্স জার্নাল

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভোলায় অনুষ্ঠিত হলো প্রাণী প্রদর্শনী মেলা

ভোলা প্রতিনিধি: ‘প্রাণিসম্পদে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট ব...

সম্মিলনী বিদ্যালয়ের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুর জেলার সদর ইউনিয়...

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক : দেশে তাপপ্রবাহ বাড়ছে। আর এই গরমে সবচেয়ে ব...

বাংলাদেশ স্কাউট দিবস ২০২৪ পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে অনুষ্...

ভাসানচরে এক রোহিঙ্গাকে গলা কেটে হত্যা

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যা...

কৃষক লীগকে গ্রামে নিয়ে যাওয়া ভালো

নিজস্ব প্রতিবেদক : কৃষক লীগকে শহরের মধ্যে আটকে না রেখে গ্রাম...

শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব বিশ্বে বিরল

নিজস্ব প্রতিবেদক : মৃত্যুঞ্জয়ী শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপ...

দেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে গত কদিন ধরেই চলছে তীব্র দাবদাহ। এ অব...

ছুটির দিনে মুখর সোহরাওয়ার্দী

নুসরাত জাহান ঐশী: আজ সপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর প্রাণকেন্দ...

ভারত ছাড়লেন সালমান খান

বিনোদন ডেস্ক : বলিউডের ভাইজান খ্যাত সুপারস্টার সালমান খান। স...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা