জাতীয়

কারাগারে বাড়তি সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক : নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার চার শতাধিক ব্যক্তি কারাগারে বন্দি। করোনাকালে অন্য বন্দিদের মতো তারাও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোনালাপের সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে এ সুযোগের অপব্যবহার করে ফোনালাপের মাধ্যমে তারা সংগঠনের সঙ্গে আন্তঃযোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে।

জঙ্গিদের সক্রিয়তা বন্ধ করতে ১ মার্চ থেকে দেশের সব কারাগারে স্বজনদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বন্দিদের কথা বলার সুযোগ বাতিল করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পুনরায় ১৫ দিনে একবার স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার নিয়ম বহাল করা হয়েছে। তবে করোনার প্রকোপ ফের বাড়তে থাকায় পুনরায় ফোনালাপের ব্যবস্থা চালু হতে পারে। কিন্তু চালু হলে এ সুযোগ আর পাবেন না জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার বন্দিরা। জঙ্গিদের বিষয়ে কারাগারে বাড়তি সতর্কতার অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে এ সিদ্ধান্ত।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে, জঙ্গিরা সাংগঠনিক বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছে ফোনালাপের মাধ্যমে। পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার নাম করে তারা সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছে।

করোনার শুরুতে কারাগারকে সংক্রমণমুক্ত রাখতে স্বজনদের সাক্ষাত বন্ধ করে দিয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষ। এর পরিবর্তে ১৫ দিনে একবার স্বজনদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয় বন্দিদের। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে জঙ্গিরা তৎপর হয়ে ওঠে কারাগারে। করোনাকালে মোবাইলে কারাগার থেকে যোগাযোগের পরিমাণ বেড়ে যায় তাদের।

এদিকে কারাগার থেকে জঙ্গিরা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠছে এমন গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাওয়ায় এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারা-১ শাখা সুরক্ষা সেবা বিভাগ।

পুনরায় ১৫ দিনে একবার স্বজনদের সঙ্গে বন্দিদের দেখা করার নিয়ম বহাল করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সাক্ষাতের সময় অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেখা করতে হবে। এছাড়া বন্দিদের স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাত সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারিতে থাকবে।

সাক্ষাতের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা
সাধারণ বন্দিদের ক্ষেত্রে ১৫ দিনে একবার সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হবে। সাক্ষাৎপ্রার্থীরা কমপক্ষে ৩ ফুট সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দেখা করার সুযোগ পাবে।

জঙ্গিদের ক্ষেত্রে নির্দেশনায় বলা আছে, জেএমবি, সন্ত্রাসী, রাষ্ট্রবিরোধী, দুর্ধর্ষ/নৃশংস অপরাধ, শীর্ষ সন্ত্রাসী, যুদ্ধাপরাধী ও মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একজন ডেপুটি জেলার ও পুলিশের বিশেষ শাখার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে, সাক্ষাৎ প্রার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বন্দির সঙ্গে সম্পর্ক নিশ্চিত করে ১৫ দিনে একবার যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যকে (মা-বাবা, শ্বশুর-শাশুড়ি, ভাই-বোন এবং স্বামী-স্ত্রী, সন্তান) সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হবে।

একজন বন্দির সঙ্গে সর্বোচ্চ একজন করে দেখা করতে পারবেন। সাক্ষাতের জন্য সময় পাবেন সর্বোচ্চ ১০ মিনিট। এছাড়া সাক্ষাতের সময় কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সাক্ষাত বন্ধ করে দিতে পারবে কারা কর্তৃপক্ষ।

তবে এক্ষেত্রে স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় বন্দিরা যেন সাংগঠনিক কোনো নির্দেশনা না দিতে পারে সে বিষয়ে নজদারি করতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাত পুনরায় চালু করায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধেও কারা অধিদফতরকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, স্বজন ও কারাবন্দিদের দেখা করার সময় উভয় পক্ষকেই মাস্ক পরতে হবে। বন্দিদের মাস্ক কারা অধিদফতর সরবরাহ করবে এবং স্বজনরা নিজেরা সাক্ষাতের সময় মাস্ক নিয়ে আসবেন। সাক্ষাতে কথা বলার সময় উভয় পক্ষকে মাস্ক পরতে হবে। সাক্ষাতের আগে ও পরে সাক্ষাতের স্থান জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে রাখতে হবে। কারাগারে প্রবেশ করার সময় দর্শনার্থীদের কারও শরীরে জ্বর, সর্দি ও কাশি থাকলে ভেতরে না যেতে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা যায়, ১ মার্চ থেকে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চালু করে দিয়েছেন। ১৫ দিনে একবার করে তারা কারাবন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া জঙ্গিদের সাক্ষাতের বিষয়টি তারা বিশেষভাবে নজদারিতে রেখেছেন। তারা যেন সাক্ষাতের সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডের নির্দেশনা বা তথ্য না দিতে পারে সে বিষয়ে জোর নজরদারি করা হচ্ছে। জঙ্গিদের সাক্ষাতের সময় সিটি ক্যামেরার পাশাপাশি কারাগারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে নজরদারি করছেন।

আরও জানা যায়, করোনা সংক্রমণ আবার বেড়ে যাওয়ায় সাক্ষাতের নির্দেশনা বাতিল করে মোবাইল ফোনে কথা বলার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ। তবে এক্ষেত্রে জঙ্গিদের ফোনে কথা বলতে দেওয়া হবে না। জঙ্গিদের মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হলে তারা আবারও এর অপব্যবহার করবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহাবুব আলম বলেন, নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ আমরা করাচ্ছি। একজন বন্দির সঙ্গে সর্বোচ্চ একজন স্বজন সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন। তবে এ সাক্ষাতের সুযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে করোনার প্রকোপ আবার বেড়ে যাওয়ায়। স্বজনদের সঙ্গে আবারও ফোনালাপের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তবে এ ব্যবস্থা চালু হলেও জঙ্গিরা এ সুযোগের বাইরে থাকবে।

২০২০ সালে দেশে জঙ্গি বিরোধী ২৩৮টি অভিযান পরিচালনা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব অভিযানে জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে ১৫০ জন জেএমবির সদস্য।

সান নিউজ/বিএস

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

লক্ষ্মীপুরে অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ 

সোলাইমান ইসলাম নিশান, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি...

স্বাধীনতা দিবস ছাত্রলীগের ইফতার বিতরণ 

সোলাইমান ইসলাম নিশান, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি...

পঞ্চগড়ে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু 

মো. রাশেদুজ্জামান রাশেদ, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:...

ফেনসিডিলসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার বৈ...

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল শিশুর

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সেনবাগে পানিতে ডুবে এক শিশুর...

ভারতের পণ্য বর্জনে সরকার এত বিচলিত কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শ...

দেশে বছরে অকাল মৃত্যু পৌনে ৩ লাখ 

নিজস্ব প্রতিবেদক: দূষণের কারণে বা...

বাগদান সারলেন অদিতি-সিদ্ধার্থ

বিনোদন ডেস্ক: ভারতের জনপ্রিয় তারকা অভিনেত্রী অদিতি রাও হায়দা...

আলুর দাম বাড়ার আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত বছরের চেয়ে এ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা