আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনায় চরম সংকটে উৎপাদন কমেছে ভারতের চা শিল্পের। এ কারণে দাম বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব দেখা গেছে নীলগিরির চায়ের নিলামে। রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে ২০২০ সাল পার করেছে এখানকার নিলাম ঘর। ৫৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে উঠেছে পণ্যের গড় দাম।
কনোড় টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশনের (সিটিটিএ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর বিজনেস লাইন। দক্ষিণ ভারতের পাহাড়ি জেলা নীলগিরি চা উৎপাদন ও বিপণনের জন্য সুপরিচিত। সিটিটিএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০ জুন মৌসুমের ৫৩তম নিলামে নীলগিরিতে প্রতি কেজি চায়ের গড় দাম ওঠে ২০৮ দশমিক ৪৭ রুপিতে (ভারতীয় মুদ্রা)।
৫৭ বছরের মধ্যে এটাই চায়ের সর্বোচ্চ গড় দামের রেকর্ড। এর পর থেকে টানা ৬ মাস ধরে এখানকার নিলামে পণ্যটির গড় দাম কেজি প্রতি ১০০ রুপির ওপরে রয়েছে। চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে (জানুয়ারি-নভেম্বর) নীলগিরির চায়ের নিলাম থেকে সব মিলিয়ে ৭৭০ দশমিক ৮২ কোটি রুপি আয় হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে সিটিটিএ।
২০১৯ সালের প্রথম ১১ মাসে এখানকার নিলাম থেকে সব মিলিয়ে ৫০৪ দশমিক ২৮ কোটি রুপি আয় হয়েছিল। সেই হিসাবে নীলগিরির চায়ের নিলাম থেকে ১ বছরের ব্যবধানে আয় বেড়েছে ২৬৬ দশমিক ৫৪ কোটি রুপি। ডিসেম্বরের শুরুর সপ্তাহে নীলগিরির চায়ের নিলাম থেকে ১০ দশমিক ৮৭ কোটি রুপি আয় হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ১১৭ শতাংশ বেশি।
সিটিটিএর চেয়ারম্যান এল ভৈরব বলেন, করোনা মহামারীর শুরু থেকে মানুষ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছে। তাদের ধারণা ছিল, চা এতে খুবই কার্যকর। এ কারণে লকডাউনে দোকানপাট ও অফিস-আদালত বন্ধ থাকলেও চায়ের চাহিদায় খুব একটা প্রভাব পড়েনি।
এ সময় শ্রমিক সংকটে উৎপাদন সীমিত হয়ে আসায় বেড়েছে পানীয় পণ্যটির দাম। নীলগিরির নিলামে টানা ছয় মাস ধরে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চা। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের শেষ দিকে এসে চায়ের দাম কমতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল। বাস্তবে তা হয়নি।
দেশে দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা ভারতীয় চা রফতানিতে দীর্ঘমেয়াদে শ্লথতা বয়ে আনার আশঙ্কা তৈরি করেছে।এ পরিস্থিতিও ভারতের বাজারে চায়ের দাম কমেনি বরং উৎপাদন সীমিত হয়ে আসার বিপরীতে অভ্যন্তরীণ বাজারে বাড়তি চাহিদা ভারতীয় চায়ের দাম চাঙ্গা রেখেছে। এদিকে চায়ের দাম বাড়তি থাকার জের ধরে চা পাতার ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে টি বোর্ড অব ইন্ডিয়া।
গত অক্টোবরে নীলগিরির ক্ষুদ্র ও মাঝারি উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে চা পাতা সংগ্রহের জন্য ন্যূনতম মূল্য কেজি প্রতি ৩০ দশমিক শূন্য ৩ রুপি বেঁধে দেয়া হয়। ভারতের ইতিহাসে এটাই চা পাতার ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্যের সর্বোচ্চ রেকর্ড। ডিসেম্বরে নীলগিরিতে চা পাতার ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে কেজি প্রতি ২৩ দশমিক ২৬ রুপি।
সান নিউজ/এসএ