নিজস্ব প্রতিবেদক : এক যুগেও চুড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি পিলখানার বিডিআর বিদ্রোহের মামলা। বিডিআর বিদ্রোহে হত্যার দায়ে করা এই মামলাটি সুপ্রিমকোর্টের আপিল নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ব্যক্তি এই মামলায় আসামি। এতো বড় মামলার আপিল শুনানি অনেক সময় সাপেক্ষ হলেও দ্রুত মামলাটি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭শে নভেম্বর বিডিআর বিদ্রোহের মামলায় ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত হন ১৮৫ জন আর ২০০ জনকে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পেয়েছেন ৪৫ জন।
গত বছর ১৩ই জানুযারি ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার পুর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষ।
প্রথম আপিলে নয়জন আসামির নথি হয়েছে ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৫ পৃষ্ঠার। একজন আসামির আপিলের পৃষ্ঠা হয়েছে প্রায় ৯৩ হাজার। এতে নয় আসামির খরচ হয়েছে জনপ্রতি প্রায় ২০ লাখ টাকা। মামলার আপিল করতেই বড় অংকের টাকা খরচ হচ্ছে আসামিদের। এর আগে এতো সংখ্যক আসামির এক মামলায় কখনো আপিল হয়নি।
তবে আসামিদের আপিল সহজ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। প্রথম আপিলের পর অন্য আসামিরা শুধু সার সংক্ষেপ দিয়ে আপিল করতে পারবেন। এতে করে একজন আসামির আপিলের নথি হবে প্রায় ৪০০ পৃষ্ঠার।
মামলার গুরুত্ব বিবেচনায় আপিল শুনানির জন্য দিন ঠিক করার আবেদন করার কথা জানালেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আশা করছেন, এ বছরের শেষে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় করা বিষ্ফোরক মামলাটি শেষ না হওয়ায় অনেক আসামি হত্যা মামলায় হাইকোর্ট থেকে খালাস পেয়েও জেল খাটছেন, অভিযোগ আসামিপক্ষে আইনজীবীর।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, "যাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ-প্রমাণ নেই, অনেকটা নিম্ন আদালতের আদলেই মহামান্য হাইকোর্টে এই রায় হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করি অধিকাংশ আসামি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এরই মধ্যে আমরা ২০৩ জনের পক্ষে ৪৮টি আপিল ফাইল করেছি।
২০০৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে জওয়ানদের হাতে নিহত ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় হত্যা মামলায় বিডিআরের ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন, ২৭৮ জনকে খালাস দিয়ে রায় দেয় বিচারিক আদালত।
সান নিউজ/এসএম