শিক্ষা

উপসর্গ

সান নিউজ ডেস্ক: উপসর্গ মূলত এক প্রকার ধ্বনি কণিকা। যা সাধারণত তেমন কোনো স্বতন্ত্র অর্থ বহন করে না। কিন্তু অন্য শব্দের পূর্বে বসে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ-বোধক নূতন শব্দের সৃষ্টি করে। এই জাতীয় ধ্বনি কণিকাকে উপসর্গ বলে। ইংরেজিতে উপসর্গকে (suffix) বলে। উপসর্গ বদ্ধ রূপমূল (bound morpheme)

উপসর্গ সংস্কৃত ব্যাকরণ থেকে বাংলা ব্যাকরণে প্রবেশ করেছে। তাই সংস্কৃত ব্যাকরণের আদলে যখন বাংলা ব্যাকরণ তৈরির কাজ হাতে হাতে এগিয়ে চলছিল, সেই সময় আমরা উপসর্গ বলতে সংস্কৃত উপসর্গেরই উল্লেখ পাই।

যেমন- বিদ্যাসাগরের ব্যাকরণ কৌমুদীতে দেশী বা বিদেশী উপসর্গের কোনো উল্লেখ পাই না। পরবর্তীকালের বাঙলা ব্যাকরণে, দেশী তথা বাংলা উপসর্গ এবং বিদেশী উপসর্গের অন্তর্ভুক্তি লক্ষ্য করি।

অর্থহীন অথচ অর্থ-দ্যোতক (দ্যোতক =সূচক, প্রকাশক) যে সকল অব্যয় শব্দ কৃদন্ত বা নাম শব্দের আগে বসে শব্দগলোর অর্থের সঙ্কোচন, প্রসারণ কিংবা অন্য কোন পরিবর্তন সাধন করে, তাদেরকে উপসর্গ বলে। যেমন- আগমন, পরিদর্শন, নিষ্ফল ইত্যাদি।

বাংলা ভাষায় কিছু কিছু অব্যয়সূচক শব্দাংশ বাক্যে পৃথকভাবে স্বাধীন কোনো পদ হিসেবে ব্যবহৃত না হয়ে বিভিন্ন শব্দের শুরুতে আশ্রিত হয়ে ব্যবহৃত হয়। এগুলোকে বলা হয় উপসর্গ। এগুলোর নিজস্ব কোন অর্থ নেই, তবে এগুলো শব্দের পূর্বে ব্যবহৃত হয়ে শব্দের অর্থের পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা সংকোচন সাধন করে।

উপসর্গ কোন শব্দ নয়, শব্দাংশ। এটি শুধুমাত্র শব্দের শুরুতে যোগ হয়। খেয়াল রাখতে হবে, উপসর্গ শুধুমাত্র শব্দেরই আগে বসে, কোন শব্দাংশের আগে বসে না। সুতরাং যে শব্দকে ভাঙলে বা সন্ধিবিচ্ছেদ করলে কোন মৌলিক শব্দ পাওয়া যায় না, তার শুরুতে কোন উপসর্গের মতো শব্দাংশ থাকলেও সেটা উপসর্গ নয়। এক্ষেত্রে নতুন শব্দের সঙ্গে মৌলিক শব্দটির কোন অর্থগত সম্পর্ক নাও থাকতে পারে।

শব্দের শুরুতে যোগ হয়ে এটি- নতুন শব্দ তৈরি করতে পারে, অর্থের সম্প্রসারণ করতে পারে, অর্থের সংকোচন করতে পারে এবং অর্থের পরিবর্তন করতে পারে।

উপসর্গের নিজস্ব অর্থবাচকতা বা অর্থ নেই, কিন্তু অন্য কোন শব্দের আগে বসে নতুন শব্দ তৈরির ক্ষমতা বা অর্থদ্যোতকতা আছে। যেমন, ‘আড়’ একটি উপসর্গ, যার নিজস্ব কোন অর্থ নেই। কিন্তু এটি যখন ‘চোখে’র আগে বসবে তখন একটি নতুন শব্দ ‘আড়চোখে’ তৈরি করে, যার অর্থ বাঁকা চোখে।

অর্থাৎ, এখানে আড় উপসর্গটি চোখে শব্দের অর্থের পরিবর্তন করেছে। আবার এটিই ‘পাগলা’র আগে বসে তৈরি করে ‘আড়পাগলা’, যার অর্থ পুরোপুরি নয়, বরং খানিকটা পাগলা। এখানে পাগলা শব্দের অর্থের সংকোচন ঘটেছে। আবার ‘গড়া’ শব্দের আগে বসে তৈরি করে ‘আড়গড়া’ শব্দটি, যার অর্থ আস্তাবল। এখানে আবার শব্দের অর্থ পুরোপুরিই পরিবর্তিত হয়ে গেছে। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, উপসর্গের নিজস্ব অর্থবাচকতা না থাকলেও তার অর্থদ্যোতকতা আছে। উপসর্গ অন্য কোন শব্দের আগে বসে নতুন শব্দ তৈরি করতে পারে।

উপসর্গের প্রকারভেদ

বাংলা ব্যাকরণে সংস্কৃত, বাংলা ও বিদেশী উপসর্গের বিচারে, উপসর্গ ৩ প্রকার। এই উপসর্গগুলো হলো-

তৎসম বা সংস্কৃত উপসর্গ, বাংলা উপসর্গ, ও বিদেশি উপসর্গ।

১. তৎসম বা সংস্কৃত উপসর্গ

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত সংস্কৃত উপসর্গ বিশটি; যথা- প্র, প্ররা, অপ, সম্‌, নি, অব, অনু, নির্‌, দুর্‌, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অভি, অতি, অপি, উপ, আ।

২. খাঁটি বাংলা উপসর্গ

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত খাঁটি বাংলা উপসর্গ একুশটি; যথা- অ, অঘা, অজ, অনা, আ, আড়্‌, আন্‌, আব্‌, ইতি, উন্‌ (উনু, উনা), কদ্‌, কু, নি, পাতি, বি, ভর, রাম, স, সা, সু, হা।

৩. বিদেশী উপসর্গ

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত বিদেশী উপসর্গের মধ্যে ফারসি ও ইংরেজি উপসর্গই বেশি দেখ যায়। কিছু উদাহরণ-

ফারসি উপসর্গের উদাহরণ- আম্‌, কার, খাস, সে (তিন), গর্‌, দর্‌, না (লা), নিম্‌, ফি, বর, ব, বদ্‌, বে, বাজে, হর্‌।

ইংরেজি উপসর্গের উদাহরণ- ফুল, সাব, হাফ, হেড।

সান নিউজ/এমএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

আজ বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস

সান নিউজ ডেস্ক: আজ ২৩ এপ্রিল, বিশ...

কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি-সমঝোতা সই 

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ও কাতা...

চরাঞ্চলে তরমুজের বাম্পার ফলন

গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার চ...

দেশবিরোধী অপশক্তি ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশবিরোধী একটি...

কাতারের আমির-প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: কাতারের আমির শে...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ...

বুধবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতি সপ্তাহের একেক দিন বন্ধ থাকে রাজধানীর...

চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ ৫ জুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ষষ্ঠ উপজেলা পরি...

বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগ আহ্বান রাষ্ট্রপতির

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এসইজেড)...

পদ্মায় গোসলে নেমে ৩ কিশোরের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে পদ্মা...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা