জাফর ওয়াজেদ : সামরিক জান্তা শাসক জেনারেল জিয়ার শাসনামলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি হতে শুরু করে পেশাজীবীরা নানা দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছিল। ছাত্র সমাজ সবচেয়ে বেশী সংক্ষুব্ধ ছিল।
১৯৭৭ সালের শেষ হতে শুরু হয় সচিবালয়ের কর্মচারিদের ধর্মঘট। তারা লুঙ্গি পড়ে অফিসে আসে। তাই এদের ম্যানেজ করতে নানা টোপ ফেলা হতো। সরকারি কোষাগার উজার করে নেতা কেনা শুরু হয়।
ক্ষোভ সেনাবাহিনীতেও তীব্র ছিল। তাই প্রায়ই ক্যু-এর ঘটনা ঘটতো। দ্রুত বিচার নামক প্রহসন করে ফাঁসিতে ঝুলানো হত প্রতিপক্ষ তথা মুক্তিযোদ্ধা সেনাদের।
এভাবে মুক্তিযোদ্ধা সেনা হ্রাস করার প্রকল্প চালু রাখা হতো। হত্যা করার জন্য-এমন কি দেশব্যাপী গণরোষ থেকে দৃষ্টি অন্যত্র সরাতে জেনারেলের নির্দেশেও ক্যু ঘটানো হতো । সে সময়ের শিক্ষা সচিব কাজী ফজলুর রহমান তাঁর ডায়েরিতে (৯ মে-মঙ্গলবার-১৯৭৮) এমন ঘটনার কথা লিখেছেন- “আমাদের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা (আশরাফ হোসেন খান) কাল একটা অবাক হওয়ার মত খবর দিলেন। বললেন, জানেন, একটা গোয়েন্দা রিপোর্ট আছে যে, আজ একটা ‘COUP’- এর চেষ্টা হতে পারে। এমন একটা ঘটনা যে ঘটতে পারে না ,তা নয়। তবে দেশের ‘শত্রুরা’তৎপর এটা দেখানোর জন্য এমন ঘটনা মঞ্চস্ত করা যেতেও পারে।”
জিয়ার আমলে কত ক্যু হয়েছে সে নিয়ে আনোয়ার কবির গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। সরকারী দল বহুদিন এই বিষয়টি বলে আসছে। কিন্তু এ নিয়ে সংসদীয় তদন্ত কমিটিও করা হয় নি । জনগণ জানতে চায়- তাই শ্বেতপত্র প্রকাশ জরুরি।
লেখক- জাফর ওয়াজেদ
মহাপরিচালক, প্রেস ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ।